কাশ্মীর সীমান্তে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিরসনে উভয় দেশের প্রতি `দায়িত্বপূর্ণ সমাধানে’ কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে ইসলামাবাদের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে চীন। স্থানীয় সময় রোববার (২৭ এপ্রিল) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানানো হয়।
সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের প্রতি সমর্থন জানালেও পাকিস্তানের সমালোচনা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তান-ভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বাকে দায়ী করেছে দিল্লি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, এটি একটি পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি এবং আমরা ঘনিষ্ঠভাবে ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছি। একই সঙ্গে একাধিক স্তরে ভারত ও পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
মুখপাত্র আরও যোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র সকল পক্ষকে একটি দায়িত্বপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
এদিকে পেহেলগাম হামলার পর ভারতের ‘মিথ্যা অভিযোগ ও `উস্কানিমূলক পদক্ষেপ’ তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে বিদেশি মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে পাকিস্তান।
এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও উপ-প্রধানমন্ত্রী (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বেও রয়েছেন) ইসহাক দায়ের চীন, যুক্তরাজ্য ও ইরানের নেতাদের সঙ্গে পৃথক ফোনালাপ করেছেন। এ সময় তারা নয়াদিল্লির ‘ভিত্তিহীন প্রচারণা ও একতরফা পদক্ষেপের’ বিষয়ে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একই সঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ইসলামাবাদের দৃঢ় অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন।
সিনহুয়া বার্তা সংস্থার মতে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ফোনালাপে বলেছেন, ‘বেইজিং পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের দৃঢ় সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রচেষ্টার প্রতি তার দেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
ওয়াংকে উদ্ধৃত করে সিনহুয়া বলেছে, এক লৌহদৃঢ় বন্ধু এবং সর্বকালের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীন পাকিস্তানের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগকে সম্পূর্ণরূপে বোঝে এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষায় সমর্থন করে।
ওয়াং আরও বলেন, `চীন দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের পক্ষে। একই সঙ্গে চীন বিশ্বাস করে, এই সংঘাত ভারত বা পাকিস্তান উভয়ের মৌলিক স্বার্থের জন্য যেমন অনুকূল নয়, তেমনি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও উপকারী নয়।’
খুলনা গেজেট/জেএম